Thursday, November 22, 2012

আনোয়ার হাসানের এক গুচ্ছ কবিতা

ছোট বেলা
........আনোয়ার হাসান
হেমন্তকে দেখেছি আমি
উজ্জ্বল তরণীর মত
শ্যামল প্রান্তরের বুক ছিঁরে
প্রবহমান নদী বালিকা
গায়ে তার সোনালী ঝরোকার সাজ
চরের বালিতে তখন
সোনলী সূর্যের খেলা
হেমন্তকে ঘিরে এই
আমার ছোট বেলা

বিজয়
........আনোয়ার হাসান
সংখ্যা গুলো যদি সাজানো যায় এভাবে
প্রথমে একুশ
এরপর ষোল
আর এইতো ইতিহাস
একুশ তো একটি সংখ্যা নয়
একুশ আমাদের চেতনা।
তেমনি ছাব্বিশ আমাদের অস্থিত্ব
আর ষোলতে অস্থিত্বের বিজয়।




রঙ
........আনোয়ার হাসান
কত কিছু দেখি আমরা
কত রঙ দেখি
কাক উড়ে যায় ভোরের বাতাসে ভেসে
সবুজ বৃক্ষের দল নিমগ্ন নির্বিকার
সাদা কুয়াশার অন্ধকারে
চাষী ভবাই সন্তর্পনে হেঁটে যায়
বোরো ক্ষেত ধরে সবুজ গন্ধ শুঁকে
চাষী বউ তখন
জীবনের সজীব রঙ উজাড় করে ঢালে
বাড়ির উঠোনে।

এই ফাল্গুনে
........আনোয়ার হাসান
এই ফাল্গুনে
কান্না এবং হাসি যোগপ আসে
তোমার পরনে যখন
বাসন্তি শাড়ীর আচঁল
লিলুয়া বাতাসে উড়ে
আমি আনন্দে উচ্ছ্বাসে হাসি তখন।
কিন্তু তোমার খোপায় গাঁথা লাল টকটকে
গোলাপ দেখি যখন
আমার ভায়ের রক্তের কথা মনে পড়ে।
আমি কাঁদি
হাসতে হাসতে কাঁদি

স্বাধীনতা
........আনোয়ার হাসান
স্বাধীনতা স্বাধীনতা
সবাই বলে স্বাধীনতা
স্বাধীনতা কী মা ?
ওরে বোকা,স্বাধীনতা !
নিজেই নিজের অধীনতা
কেন বোঝ না।
পাখি যেমন ডানা মেলে ওড়ে
নীলাকাশের বুকে
ফুলগুলি সব পাপড়ি মেল ধরে
অন্যরা সব গন্ধ নিয়ে শুকে ।
তেমন করে তুমিও যদি বাছা
মেলে ধরে মনের বন্দি খাঁচা
তুমিই হবে স্বাধীন যুবরাজ।
একাত্তর যে শিশুটি জীবন দিয়ে গেলে
সেই তো স্বাধীন সার্বভৌম ছেলে
নইলে তুমি জীবন পেতে আজ?

স্বাধীনতা তোমাকে সালাম
........আনোয়ার হাসান
কত রক্ত কত প্রান
উজাড় করে দিয়ে
স্বাধীনতা এল।
কত লাঞ্চনা কত কষ্ট
সহ্য করে করে
স্বাধীনতা এল।
প্রচন্ড গুলার মুখে
মুত্যুকে তুচ্ছ করে দিয়ে
স্বাধীনতা এল।
দুখিনী মায়ের ছেঁরা আঁচল দিয়ে
দুচোখ মুছতে মুছতে
স্বাধীনতা এল।
অসহায় বোনের সম্ভ্রম হারিয়ে
ভর নি:স্ব হয়ে
স্বাধীনতা এল।
সমস্ত নৈরাশ্য আর হতাশাকে
ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
স্বাধীনতা এল।
বিচ্ছিন, টুকরো টুকরো মানুষের মগজ
ঐক্য বদ্ধ করে
স্বাধীনতা এল।

কোটি বাঙালির জীবনে
শাশ্বত মহার্ঘ্য হয়ে  
স্বাধীনতা এল।

জয় হে স্বাধীনতা
স্বাধীনতা তোমাকে সালাম।

মা মাটি ভাষা
........আনোয়ার হাসান
আমার ভাষা, বাঙলা ভাষা
বাঙলা আমার মা

ভাষা মায়ের প্রাণের সূধা
কোথাও পাবে না।

জন্মধাত্রী মা জনন
গর্ভে দিলেন ঠাঁই
ভাষা মাতা জবান দিলেন
তুলনা তার নাই।

মাতৃভাষা মাতৃভূমি
জন্মধাত্রী মা
তিন মা মিলে গড়ে তুলেন
আমার চেতনা।